নির্বাচনী তৎপরতা ও ব্যবসায়িক স্বার্থের অভিযোগে ফারুকের অপসারণ, সাবেক সভাপতির পাল্টা অবস্থান


সরকারের আস্থাভাজন হিসেবেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি পদে এসেছিলেন ফারুক আহমেদ। তবে মাত্র নয় মাসের মধ্যেই পরিস্থিতি পাল্টে যায়—সরকারের অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠেই গত মে মাসে বিদায় নিতে হয় তাঁকে।

সম্প্রতি ইউটিউবভিত্তিক টক শো ঠিকানায় খালেদ মুহিউদ্দীন-এ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া ব্যাখ্যা করেন কেন ফারুককে সরানো হয়েছিল। তাঁর দাবি, ক্রিকেটের চেয়ে ফারুক বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছিলেন বিসিবির নির্বাচন ও ব্যক্তিগত ব্যবসায়।

উপদেষ্টার ভাষায়, ‘ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে তিনি ভেবেছেন কীভাবে ভবিষ্যতে সভাপতি হওয়া যায়, ক্লাব নেওয়া যায়, সেই সঙ্গে ব্যবসার নানা দিকেও তাঁর ঝোঁক ছিল।’ বিপিএলে দুটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে ঘিরে সৃষ্ট বিতর্কের দায়ও তিনি দিয়েছেন ফারুকের কাঁধে।

তবে পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ফারুক বলেন, বিসিবি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শও এসেছে ওই ক্রীড়া উপদেষ্টার অফিস থেকেই। প্রথম আলোকে তিনি জানান, “আমাকে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল নির্বাচনে অংশ নিতে কোনো সমস্যা নেই। পরে হয়তো তারা বুঝেছে আমি তাদের স্বার্থ রক্ষা করব না, তাই সরিয়ে দিয়েছে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, বোর্ড সভাপতি থাকার সময় তিনি কখনো ক্লাব কেনেননি, কাউন্সিলর হননি কিংবা কাউন্সিলরশিপ পেতে কারও কাছে টাকা দেননি। বরং নিয়ম অনুযায়ী প্রাথমিক প্রস্তুতিই নিচ্ছিলেন নির্বাচনের জন্য।

ব্যবসায়িক স্বার্থের অভিযোগ নিয়েও বিসিবির সাবেক সভাপতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর ভাষায়, “আমি পেশায় ব্যবসায়ী, ব্যবসা করাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বিসিবির সঙ্গে কোনো ব্যবসায় জড়াইনি, স্বার্থের সংঘাতও তৈরি করিনি।”

বিপিএলের বিতর্ক প্রসঙ্গে ফারুক বলেন, দায় শুধু তাঁর ওপর চাপানো উচিত নয়। বরং যাঁরা টুর্নামেন্টের দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদের কার্যক্রমও খতিয়ে দেখা উচিত।

তাঁর বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ নেই বলেও পরিষ্কার করেছিলেন ক্রীড়া উপদেষ্টা। দুদকের তদন্তে বিসিবির তহবিল এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে স্থানান্তরের অভিযোগ থেকেও ফারুক মুক্তি পান।

সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই তৃতীয় বিভাগ বাছাই ক্রিকেটের অনিয়ম দূর করে সব দলকে অংশ নেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনি। দুদকের প্রতিবেদনের সুপারিশেও সেই উদ্যোগের প্রশংসা পাওয়া গেছে।

তবে বিসিবিতে ভোটার সংখ্যা বাড়াতে ক্লাব মালিকদের সঙ্গে কর্মকর্তাদের যোগসাজশের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে বলে দুদক মন্তব্য করেছে। বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্য অনুসন্ধান করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করা হলেও তাঁর দপ্তর থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।


Comments

Popular posts from this blog

৩ ওভারে ২৪ রান দেওয়া মুস্তাফিজকে নিয়ে যা বললেন অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল

৯২ মিনিটে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, পেনাল্টি ছিল নাকি জানালেন ফিফার স্বীকৃত রেফারি

টি২০ র‍্যাঙ্কিংয়ে ১০ নাম্বারে থাকা বাংলাদেশকে ১ নাম্বারে আনতে নতুন সভাপতি বুলবুল স্কোয়াডে আনছে ১ জন অবহেলিত হার্ড হিটারকে