স্পেনের স্বপ্ন চুরমার, ইউরো সিংহাসনে আবার ইংল্যান্ড

দুই বছর আগের নারী বিশ্বকাপের ফাইনালে স্পেনের কাছে হেরে ট্রফি হারানো ইংল্যান্ড অবশেষে সেই ক্ষত মুছে ফেলল। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে আবারও মুখোমুখি দুই দল, আর এবার টাইব্রেকারে ৩-১ গোলে জিতে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ইউরোপ সেরা হলো ইংলিশ মেয়েরা।

ইউরোর ইতিহাসে ১৯৮৪ সালের পর এই প্রথম ফাইনাল গড়াল টাইব্রেকারে। আর প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে হতাশায় ডুবল ২০২৩ সালের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেন। বল দখল আর আক্রমণে আধিপত্য দেখালেও ইংল্যান্ডের দৃঢ় রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি তারা।

সুইজারল্যান্ডের বাসেলে অনুষ্ঠিত ফাইনালে নির্ধারিত ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত ৩০ মিনিট শেষে স্কোরলাইন ছিল ১-১। পেনাল্টি শুটআউটে স্পেনের চার শটের তিনটি ঠেকান ইংল্যান্ডের গোলরক্ষক। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের প্রথম চার শটের দুটিতে গোল হওয়ার পর নির্ধারণী পঞ্চম শট নিতে এগিয়ে আসেন ক্লোয়ি কেলি। ২৭ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড নিখুঁত শটে শিরোপা নিশ্চিত করেন। ম্যাচ শেষে তিনি বলেন,
‘আমি শান্ত আর সংযত ছিলাম। জানতাম বল জালে জড়াবেই।’
২০২২ সালের ইউরো ফাইনালের জয়সূচক গোলটিও এসেছিল কেলির পা থেকে।

ম্যাচের প্রথমার্ধে স্পেনই এগিয়ে যায়। ২৫তম মিনিটে ওনা ব্যাটলের ক্রসে হেডে গোল করেন মারিওনা কালদেন্তে। প্রথমার্ধ জুড়ে স্পেনের ছিল বল দখল ও আক্রমণের দাপট—প্রায় ৬৫ শতাংশ বল নিয়ন্ত্রণে রেখে তারা নেয় ২২টি শট, যার পাঁচটি লক্ষ্যে ছিল। তবে ৫৭তম মিনিটে সমতায় ফেরে ইংল্যান্ড; বদলি হিসেবে নামা কেলির ক্রসে হেডে গোল করেন অ্যালেসিয়া রুসো। ইংল্যান্ডের নেওয়া আট শটের মধ্যে পাঁচটিই ছিল লক্ষ্যে।

বাকি সময়ে উভয় দলই জয়ের চেষ্টা চালালেও আর গোল পায়নি কেউ। অতিরিক্ত সময়েও সমতা থাকায় ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে, যেখানে ইংল্যান্ড হাসে শেষ হাসি।

এই জয়ে নারী ইউরোতে একাধিকবার শিরোপা জেতা তৃতীয় দল হলো ইংল্যান্ড। তাদের আগে নরওয়ে জিতেছে দুইবার এবং জার্মানি রেকর্ড আটবার।

ইংল্যান্ডের ঐতিহাসিক এ সাফল্যের নেপথ্যে আছেন কোচ সারিনা ভাইগমান। নেদারল্যান্ডসের হয়ে ২০১৭ সালে এবং ইংল্যান্ডের হয়ে ২০২২ ও ২০২৫ সালে টানা তিনটি ইউরো শিরোপা জয়ের অনন্য কৃতিত্ব গড়লেন তিনি। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বসিত ভাইগমান বলেন,
‘আমরা জানতাম, যেকোনোভাবে জেতা সম্ভব। আজ সেটাই আবার প্রমাণ করলাম। আমি দল এবং স্টাফদের নিয়ে ভীষণ গর্বিত—এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’