বারবার বিতর্কে ক্রিকেটাররা, সমাধানে কাউন্সেলিংয়ের পথে বিসিবি
সোমবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হঠাৎ তোলপাড় শুরু হয়। গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে জাতীয় দলের পেসার তাসকিন আহমেদ নাকি এক বন্ধুকে মারধর করেছেন, আর সেই বন্ধু মিরপুর থানায় অভিযোগও করেছেন। খবরটি ছড়িয়ে পড়তেই তাসকিনভক্ত ও ক্রিকেট অনুরাগীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। কেউ বিশ্বাস করতে না পেরে হতবাক, কেউ আবার তাসকিনকে বিতর্কিত ক্রিকেটারদের সারিতে ফেলতে শুরু করেন।
দুপুরের মধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে নেতিবাচক পোস্টে ভরে ওঠে। তবে বিকেলের দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়, যখন তাসকিন অভিযোগ অস্বীকার করেন। বিসিবিকে তিনি জানান, ‘‘আমার বন্ধুদের মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। এক পক্ষ আমাকে থানায় যোগাযোগ করতে বলে, আমি ওসিকে ফোন করি। এরপর অপর পক্ষ ক্ষুব্ধ হয়ে উল্টো আমার বিরুদ্ধেই অভিযোগ দায়ের করে।’’
সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক পেজে তাসকিন লেখেন, ‘‘সবাইকে অনুরোধ করছি গুজবে কান দেবেন না। আমার নামে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিষয়টি নিয়ে আমার বন্ধুর সঙ্গেও কথা হয়েছে। সত্য সবসময় সত্যই থাকে।’’
এ ঘটনার পর অনেকেই বিশ্বাস করেন, তাসকিন এ ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত নন এবং বন্ধুদের আক্রোশের শিকার হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ঘটনাটি আর বড় আকার নেবে না। তবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে খেলোয়াড়দের নিয়ে বিতর্ক নতুন কিছু নয়। অতীতে একাধিক ক্রিকেটার শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অসদাচরণের ঘটনায় আলোচনায় এসেছেন, যা দেশের ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে।
বিসিবির অভ্যন্তরীণ নীতিমালায় ক্রিকেটারদের সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়ে কোনো স্পষ্ট ‘‘কোড অব কন্ডাক্ট’’ না থাকায় বিতর্ক বারবার ঘনীভূত হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতিখার রহমান মিঠু জানান, ‘‘আমরা ক্রিকেটারদের সামাজিক দায়বদ্ধতা সম্পর্কে সচেতন করতে কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, কেবল কাউন্সেলিং যথেষ্ট নয়; শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড রোধে কঠোর আইন এবং তার যথাযথ প্রয়োগ প্রয়োজন। জাতীয় দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় চুক্তিপত্রে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও আচরণবিধির বিষয়টি স্পষ্টভাবে অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।
বিসিবির সিনিয়র পরিচালক মাহবুব আনাম বলেন, ‘‘তাসকিনের বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়েছি এবং নিশ্চিত হয়েছি, সে নিরপরাধ। বন্ধুর ব্যক্তিগত আক্রোশের শিকার হয়েছে। তবে বারবার এ ধরনের অভিযোগ আসা বিব্রতকর।’’
Comments
Post a Comment