শেষ টেস্ট খেলতে নামার আগে হতাশার আর ক্ষোভ উগরে দিলেন ম্যাথিউস

 


অবসরের আগে শেষ টেস্ট খেলতে নামার আগেই নিজের ভেতরের হতাশা আর ক্ষোভ উগরে দিলেন শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড ছাড়া বাকি দলগুলো যেন টেস্ট ক্রিকেটে উপেক্ষিতই থেকে যাচ্ছে।


২০২৫ সালে শ্রীলঙ্কা মাত্র চারটি টেস্ট ম্যাচ খেলবে, যা ২০১৩ সালের পর সবচেয়ে কম (করোনাকালীন ২০২০ বাদে)। আর ২০২৩-২৫ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (ডব্লিউটিসি) চক্রের চিত্র আরও হতাশাজনক। আগের চক্রে অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড প্রত্যেকেই খেলেছিল অন্তত ১৯টি করে টেস্ট, কিন্তু চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা খেলেছিল মাত্র ১৩টি।


নতুন ডব্লিউটিসি চক্রে অস্ট্রেলিয়া ২২টি, ইংল্যান্ড ২১টি এবং ভারত ১৮টি টেস্ট খেলবে। অথচ শ্রীলঙ্কা খেলবে আগের চেয়েও কম, মোট ১২টি টেস্ট—ছয়টি দুই ম্যাচের সিরিজে। এই সংখ্যাটি বাংলাদেশের সঙ্গে মিলে সর্বনিম্ন। এতো কম টেস্ট খেলা সত্যিই হতাশার বলেই জানিয়েছেন ম্যাথিউস।



ম্যাথিউস বলেন, "সত্যি বলতে, এটা খুবই হতাশার। নতুন প্রজন্ম টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চায়। এই ফরম্যাটই আসল ক্রিকেট। আমাদের টেস্ট ম্যাচ বাড়ানোর দাবি তোলা উচিত। এই ছেলেরা টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভীষণ আগ্রহী।"


তিনি আরও যোগ করেন, "আমি মনে করি, বছরে অন্তত ১০টি টেস্ট ম্যাচ খেলানো উচিত। ইংল্যান্ড, ভারত, অস্ট্রেলিয়া বছরে ১৫টির বেশি খেলছে, আমরা কেন পারবো না? পারি। শ্রীলঙ্কা বিশ্বকাপ জিতেছে, ক্রিকেটে অনেক অবদান রেখেছে। আমরাও সমান সুযোগ পাওয়ার যোগ্য।"




ম্যাথিউসের এই অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু নয়। বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের আগেও একই কথা বলেছিলেন টেস্ট অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাও। তবে ১১৮ টেস্ট খেলা একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের কণ্ঠে যখন একই সুর, তখন গুরুত্বটা আরও বেড়ে যায়। কারণ, ভবিষ্যতে কজন শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড় এই সংখ্যার টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে—এই প্রশ্ন থেকেই যায়।


৩৮ বছর বয়সী এই তারকা অকপটে বলেই দিলেন যে টেস্ট থেকে বিদায় নেওয়ার সিদ্ধান্তে ম্যাচ কমে যাওয়ার প্রভাব ছিল। "আমার ১০০তম টেস্ট ছিল গলে। তাই মনে হয়েছিল সেখান থেকে বিদায় জানাই। তবে আসল কারণ হচ্ছে সামনে আর কোনো টেস্ট নেই। এক বছরের মতো বিরতি পড়ে যাবে। এত লম্বা গ্যাপ থাকলে তো ছন্দ ধরে রাখা বা সুযোগ পাওয়াটাই কঠিন হয়ে পড়ে," বললেন ম্যাথিউস।


তিনি আরও বলেন, "তাই আমি ভাবলাম, এক ম্যাচ খেলি, এরপর যিনি আমার জায়গায় আসবেন তাকে দ্বিতীয় টেস্টে সুযোগ দিই। কারণ ওই একজন ম্যাচ খেলতে হলেও, তার পরের সুযোগটা আসবে এক বছর পর! তত দিনে কে কোথায় থাকবে, সেটাও তো নিশ্চিত না।"


অবসরের সিদ্ধান্তটা আবেগের হলেও, বাস্তব পরিস্থিতিই যেন ম্যাথিউসকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। টেস্ট ক্রিকেটের এমন দুঃসময়ে, তাঁর কণ্ঠে ভেসে উঠেছে লাল বলের ক্রিকেট বাঁচানোর আকুল আহ্বান। টেস্ট ক্রিকেট কি সত্যিই শুধু কিছু নির্দিষ্ট দেশের খেলার ফরম্যাট হয়ে যাচ্ছে?




Comments

Popular posts from this blog

৩ ওভারে ২৪ রান দেওয়া মুস্তাফিজকে নিয়ে যা বললেন অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেল

৯২ মিনিটে রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, পেনাল্টি ছিল নাকি জানালেন ফিফার স্বীকৃত রেফারি

টি২০ র‍্যাঙ্কিংয়ে ১০ নাম্বারে থাকা বাংলাদেশকে ১ নাম্বারে আনতে নতুন সভাপতি বুলবুল স্কোয়াডে আনছে ১ জন অবহেলিত হার্ড হিটারকে